চিকিৎসকদের সাথে ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্ক নৈতিকতার মানদন্ডে উন্নীত হওয়া প্রয়োজন: অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম
02 Aug, 2025 12:00 PM - 02 Aug, 2025 01:00 PM |
বাংলাদেশ রেনাল এ্যাসোসিয়েশনের বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত
চিকিৎসকদের সাথে ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্ক নৈতিকতার
মানদন্ডে উন্নীত হওয়া প্রয়োজন: অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম
বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) এর মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম বলেছেন, চিকিৎসকদের সাথে ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্ক নৈতিকতার মানদন্ডে উন্নীত হওয়া প্রয়োজন। আজ শনিবার ২ আগস্ট ২০২৫ইং তারিখে রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ রেনাল এ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘ইমপ্রুভমেন্ট অফ কোয়ালিটি অফ লাইফ ইন সিকেডি পেশন্টস: ম্যানেজিং পিউরিটস এন্ড এমবিডি’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে তিনি ‘ইথিক্যাল কনসিডারেশনস ফর এ্যাটেন্ডিং ফার্মাসিউটিক্যাল সেমিনারস (Ethical Considerations for Attending Pharmaceutical Seminars: Balancing Ethics, Academic Integrity and Professional Responsibilities )’ শীর্ষক একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এসময় অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম বলেন, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির সৌজন্যে আয়োজিত বিভিন্ন সেমিনার, কনফারেন্সসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামে চিকিৎসকদের অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনার সময় এসেছে। এধরণের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করা যাবে, না যাবে না তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন রয়েছে আবার বিশদ আলোচনারও দাবি রাখে। এই ধরণের প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে নৈতিকতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আবার পাবলিক পারসিপশন বা জনগণ বা রোগীরা কীভাবে এটাকে দেখছেন সেটাও বিবেচনায় রাখতে হবে। কোনোভাবেই চিকিৎসকদের নৈতিকতাকে বা চিকিৎসা পেশার মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করে এমন কিছু থাকলে সেক্ষেত্রে সেই সকল প্রোগ্রামে অংশ না নেয়াই ভালো। ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে এধরণের আয়োজনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে নৈতিকতার দৃষ্টি ভঙ্গিতে বিধি নিষেধ রয়েছে। কেবলমাত্র চিকিৎসকদের সাথে ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্ক নৈতিকতার মানদন্ডে উন্নীত হলে এই ধরণের আয়োজনে অংশ নেওয়া যায়। যদি সেখানে চিকিৎসকদের ব্যক্তি স্বার্থের পরিবর্তে রোগীদের স্বার্থ অগ্রাধিকার পায়। যদি সেখানে চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা প্রাধান্য পায়। রোগীদের কল্যাণ হয়। কম দামী কিন্তু অধিক কার্যকরী ওষুধ প্রাপ্তি, উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখে এমন বিষয়সহ নানাবিধ বিষয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞান রোগীদের কল্যাণে প্রয়োগ হয় এমন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে চিকিৎসকদের বাধা নেই। তাছাড়া এই ধরণের আয়োজনে যারা অংশ নিবেন তাদেরকে সেই বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। এই ধরণের আয়োজনে কি ধরণের স্বার্থ রয়েছে, কাদের স্বার্থ পূরণ করা হচ্ছে, আর্থিক সংশ্লিষ্টতা কী রকম, রোগীদের স্বার্থ কতটুকু সংরক্ষণ করা হচ্ছে সে রকম নানা বিধ বিষয় বর্তমান সময়ে বিষদ আলোচনার যেমন দাবি রাখে এবং চিকিৎসকদের সাথে ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্ক নৈতিকতার মানদন্ড নিয়ে সর্বত্র আলোচনার এখনই সর্বোত্তম সময়। এমন কি জুলাই আন্দোলনে যে একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সুযোগ এসেছে সেই লক্ষ্য পূরণেও এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার যেমন দাবি রাখে একই সাথে চিকিৎসকদের সাথে ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্ক নৈতিকতার মানদন্ডে উন্নীত হতেই হবে। আমাদেও এটাও মনে রাখতে হবে, চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেকই নিঃস্ব হচ্ছেন, এদেশে বছরে লক্ষ লক্ষ মানুষ গরীব হচ্ছেন। তাই বিষয়টি নিয়ে আর চুপ থাকা যাবে না।
আয়োজনের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করা হয় এবং জুলাই আন্দোলনে শহীদদের এবং মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে নিহত শিশুদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া মোনাজাত করা হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে বিশেষ ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করেন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডা. গোলাম মাহবুব সিকদার। বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ডা. ইমরান বিন ইউনুস। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেনাল এ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার দত্ত, অধ্যাপক ডা. আব্দুল মুকিত, অধ্যাপক ডা. ধ্রুব দাস, অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম চৌধুরী, ডা. সৈয়দ মাহতাব উল ইসলাম, ডা. এনামুল কবির, ডা. আনিসুজ্জামান প্রমুখসহ এ্যাসোসিয়েশনের চিকিৎসকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনায়: ডা. সাইফুল আজম রঞ্জু। ছবি: মোঃ আরিফ খান। নিউজ: প্রশান্ত মজুমদার।